স্বদেশ ডেস্ক:
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে গত বুধবার টানা তৃতীয়বারের মতো শপথ নেন। আর গতকাল বৃহস্পতিবারই নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতা পরিদর্শনে কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করে মমতা বলেছেন, এমনটি কখনই দেখিনি। নতুন সরকার ২৪ ঘণ্টারও বেশি পুরনো হলো না, এর মধ্যেই কেন্দ্র থেকে দল এসেছে। খবর এনডিটিভি।
এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে টানটান উত্তেজনা ছিল। সেই নির্বাচনে বিজেপি পরাজিত হয়েছে। এর মধ্যে রাজ্যে নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতের মধ্যে বিজেপি ও তৃণমূল উভয় দলের নেতাকর্মী রয়েছেন। এসব সহিংসতার জন্য বিজেপি তৃণমূলকে দায়ী করছে। এ নিয়ে রাজ্য সরকারকে চাপ দিচ্ছে কেন্দ্র। গতকাল এ নিয়ে প্রকাশ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মমতা। তার কথায়- রাজ্যে যখন অক্সিজেন ছিল না, তখন তো ওনারা আসেননি। উত্তরপ্রদেশে হাথরসে যখন অত বড় ঘটনা ঘটে গেল, তখনই বা কী করছিলেন ইনারা? আর বাংলায় ভোটপরবর্তী হিংসার খোঁজ নিতে এর মধ্যেই চলে এলেন! এ ব্যাপারে এক রকম বিস্ময় প্রকাশ করেই মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘আগে কখনো এ রকম দেখিনি।’ মমতার কথায়, ‘আসলে বিজেপি এখনো জনতার রায় মেনে নিতে পারছে না। ওদের আমার অনুরোধ, আপনারা সংযত হন। মানুষের রায় মেনে নিন।’
খবরে বলা হয়, ভোটপরবর্তী সহিংসতা তদন্তে চার সদস্যের দল পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল সকালেই তারা পশ্চিমবঙ্গে পৌঁছন। তদন্তের কাজে সন্ধ্যায় ভাটপাড়ায় যান তদন্তকারীরা। বিজেপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখাও করেন তারা।
এদিকে মমতা চলমান সহিংসতা নিয়ে বিজেপিকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, যেসব এলাকায় ওরা বেশি সিট পেয়েছে, সেখানেই গু-ামি করছে। গত কয়েক দিনে এই গু-ামি অনেকটাই বেড়েছে। কোচবিহারে হিংসা বেশি হচ্ছে। সবদিকে নজর রেখেছি আমি। এমনকি কিছু কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতা এসব অশান্তিতে উসকানি দিচ্ছেন বলেও খবর আছে আমার কাছে।
এদিকে বিজেপির নিহত নেতাকর্মীদের সহায়তা দেওয়া হবে বলেও মমতা ঘোষণা দেন। গতকাল রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন নবান্নে সংবাদ সম্মেলনে মমতা বলেন, মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ টাকা দেওয়া হবে। তার কথায়, এই সহায়তা সামান্যই। তবে সাহায্য করার ক্ষেত্রে কোনো ভেদাভেদ করা হবে না। মৃত ব্যক্তি বিজেপির কর্মী হোন, আর সংযুক্ত মোর্চার কিংবা তৃণমূলের হোক- তারাই এই সহায়তা পাবেন।
উল্লেখ্য, ২৭ মার্চ নির্বাচন শুরু হয়ে আট পর্বে শেষ হয় ২৯ এপ্রিল। ২ মে ফলাফল ঘোষণা হয়। এতে দেখা তৃণমূল ২১৩ আসন পায় আর বিজেপির ঝুলিতে জমা হয় ৭৭ আসন। এরপর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সহিংসতার খবর আসে।